বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কির বক্তব্যের সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছে বিএনপি। ওই বক্তব্যকে অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ও আওয়ামীসুলভ আখ্যা দিয়েছে দলটি। বিএনপির অভিযোগ, রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অনুভূতিতে আঘাত করেছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দেন বিএনপির জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিবৃতিতে বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায় ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়, তথা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, স্বাধীনতার সংকল্প ও মহান আত্মত্যাগের প্রতি উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শনের জন্য রাশিয়াকে অনুরোধ জানায় বিএনপি।
গত বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে বিএনপির বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর, মিথ্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত। তিনি এ ধরনের বক্তব্য বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এর আগে গত শনিবার দলের একটি কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছিলেন, ভারত, চীন আর রাশিয়া—তাদের সরকার শেখ হাসিনার সরকার; এটা বাংলাদেশের জনগণের সরকার নয়।
রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত আজকের বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত মান্টিটস্কি বিএনপির বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর, মিথ্যা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বলে দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তিনি (রাষ্ট্রদূত) আরও দাবি করেন, নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ সরকারকে নির্বাচিত করেছে এবং ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে। যাদের অধিকাংশ ভোট দিয়েছে আওয়ামী লীগকে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের এমন বক্তব্যকে অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ও আওয়ামীসুলভ উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। বলা হয়, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বলয়ের বাইরের সব বাংলাদেশি নাগরিক আজ নিজেদের অধিকার ও স্বাধীনতা হারিয়ে নিজ দেশে পরাধীন। ১৫ বছর ধরে গণবিদ্বেষী সরকার যে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও দমন-দুর্বৃত্তায়ন চালিয়েছে, সমাজের প্রতিটি শ্রেণি ও পেশার মানুষ তাতে বৈষম্য, অবিচার ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে প্রহসনমূলক ও ডামি নির্বাচন দাবি করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নির্বাচনের উদ্দেশ্য জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা বা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ছিল না।
নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মতামত উল্লেখ করে বিবৃতিতে দাবি করা হয়, বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্বসহ প্রায় ২৫ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে এই নির্বাচনের পূর্বনির্ধারিত ফলাফল ঘোষণার পর জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার হতাশা পোষণ করেন। সব বড় রাজনৈতিক দল অংশ না নেওয়ায় নির্বাচন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা নির্বাচনী অনিয়মের সময়োপযোগী ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিতের আহ্বানও জানায়। নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হয়নি বলে মত পোষণ করে যুক্তরাষ্ট্র।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রত্যাশা, গণ আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে রাশিয়া, ভারত, চীন বা অন্য কোনো রাষ্ট্র শেখ হাসিনা সরকারের গণবিরোধী অপশাসনকে অযাচিত সমর্থন করবে না বলে বিএনপি বিশ্বাস করে। একইভাবে বিএনপির বিশ্বাস, দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতুবন্ধনেই দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক সাফল্য নিহিত।
""বি:দ্র: এই সাইটের কোন লেখা বা ছবি কপি করা আইনত দন্ডণীয়""
Copyright © 2025 www.digantapratidin.com. All rights reserved.